
ঝিনাইদহ: ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলার আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ২২ ঘণ্টার ব্যবধানে নৌকার দুই সমর্থককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। শনিবার বিকালে উপজেলার সারুটিয়া ইউনিয়নের ভাটবাড়িয়া গ্রামে জসিম উদ্দিন নামে ছুরিকাঘাতে একজন মারা যান। আর শুক্রবার রাতে সারুটিয়া ইউনিয়নের কাতলাগাড়ী বাজারে কুপিয়ে হত্যা করা হয় নৌকার সমর্থক হারান বিশ্বাসকে।
জানা যায়, পঞ্চম ধাপের সারুটিয়া ইউনিয়নের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মাহমুদুল হাসান মামুন ও স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী জুলফিকার কাইসার টিপুর মধ্যে নির্বাচনী প্রচারণা নিয়ে বেশ কয়েকদিন যাবত ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় নির্বাচনী অফিস, মোটরসাইকেল ও বাড়িঘর ভাঙচুরের ঘটনা ঘটছে।
এরই জের ধরে শুক্রবার বিকালে কাতলাগাড়ী বাজারে নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী মাহমুদুল হাসান মামুন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী জুলফিকার কাইসার টিপুর দুই সমর্থকের মধ্যে তর্কবিতর্ক হয়। তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় পুলিশ ক্যাম্পের সদস্যরা দুইপক্ষকে বসিয়ে সমঝোতা করে দেন।
পুলিশ জানায়, বাকবিতণ্ডার পর সন্ধ্যায় সারুটিয়া ইউনিয়নের কাতলাগাড়ী বাজারে নৌকার চেয়ারম্যান প্রার্থী মাহমুদুল হাসান মামুনের কর্মী সমর্থকরা নির্বাচনী অফিসে বসা ছিলেন। এসময় স্বতন্ত্র প্রার্থী জুলফিকার কাইসার টিপুর লোকজন সেখানে দেশীয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা চালান।
হামলাকারীরা হারান বিশ্বাসসহ অন্তত ২০ জনকে কুপিয়ে জখম করেন। আহতদের উদ্ধার করে শৈলকুপা হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার রাত ৮টার দিকে হারান বিশ্বাস মারা যান। গুরুতর আহত রবিউল, রজব আলী ও ইয়ার উদ্দিনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
এদিকে হারান বিশ্বাসের জানাজায় অংশ নেওয়ার জন্য আজ বিকালে নৌকার সমর্থক জসিম উদ্দিনসহ দুইজন ইউনিয়নের ভাটবাড়িয়া গ্রামে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তখন স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকেরা তাদের দুইজনকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে শৈলকূপা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করলে জসিম উদ্দিন মারা যান।
সারুটিয়া ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী মাহমুদুল হাসান মামুন বলেন, নৌকার কর্মী সমর্থকদের ওপর পরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন ধরনের হামলার ঘটনা ঘটিয়ে যাচ্ছে বিরোধীপক্ষ। ২২ ঘণ্টার মধ্যে আমার দুইজন কর্মীকে হত্যা করেছে। তাছাড়া আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৩০ জন। তাদের অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। অনেককে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
শৈলকূপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম জানান, বর্তমানে ইউনিয়নের পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে পরিস্থিতি শান্ত রাখতে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাচন অফিসের দেওয়া তথ্যমতে, পঞ্চম ধাপে শৈলকূপায় ১২টি ইউনিয়নের মধ্যে ৩টিতে ইভিএম ও বাকি ৯টি ইউনিয়নে ব্যালটের মাধ্যমে আগামী ৫ জানুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ১৬ হাজার ২৬৭ জন আর নারী ১ লাখ ১৫হাজার ৭৭১ জনসহ মোট ২ লাখ ৩২ হাজার ৬৮জন ভোটার রয়েছেন।