
সিলেট: শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিসহ ক্যাম্পাসে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করেছেন আন্দোলনকারীরা। সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের
গোলচত্বরে সাংবাদিকদের সাথে প্রেস কনফারেন্সে এ ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোনকারীরা। একই সঙ্গে ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক জহীর উদ্দিন আহমদ ও প্রক্টর ড. আলমগীর কবীরের পদত্যাগ দাবি করেন তারা।
আন্দোলনকারীরা বলেন, ‘আমরা উপাচার্যকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করছি এবং তাকে এই ক্যাম্পাস থেকে চলে যেতে হবে। আমরা মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য বরাবর গণস্বাক্ষরসহ চিঠি দিব। উপাচার্য পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে এবং কোনো শিক্ষার্থী হল বা ক্যাম্পাস ছেড়ে যাবে না।’
এদিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা দুপুর আড়াইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক দুটি ভবন, একাডেমিক ভবন ‘বি’, ‘সি’, ‘ডি’ ‘ই’ এবং ইউনিভার্সিটি সেন্টার ও বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন। এর আগে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশের লাঠিচার্জ ও হামলার পরে উপাচার্যের পদত্যাগ এবং ক্যাম্পাস বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন করছিল সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
অন্যদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ ইশফাকুল হোসেন। তিনি বলেন, ভৌত বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. রাশেদ তালুকদারকে প্রধান করে সকল ডিন এবং শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. তুলসী কুমার দাস ও রেজিস্ট্রারকে নিয়ে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এছাড়া আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের অপেক্ষমান তালিকা থেকে ভর্তির তারিখ থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘এ’ বিল্ডিংয়ে ভর্তি চলছিল। নোয়াখালী থেকে ভর্তি হতে আসা মোস্তাফিজুর রহমান নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘এখানে আমাদের কোনো সমস্যা হচ্ছে না। আমরা ঠিকভাবে ভর্তি হতে পারছি।’
এ বিষয়ে ভর্তি কমিটির সদস্য সচিব সহযোগী অধ্যাপক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল হোসাইনি বলেন, ‘আমরা সকাল ৯টা থেকে সুন্দরভাবে ভর্তি কার্যক্রম চালাচ্ছি।’
এদিকে, বন্ধ ঘোষণার কারণে সকালের দিকে হলের আবাসিক কিছু শিক্ষার্থীকে হল ছেড়ে যেতে দেখা যায়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ও শাহপরান হলে গিয়ে কিছু শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে তারা জানান, এখন তারা হল ছাড়বেন না এবং হলে থাকা বেশকিছু শিক্ষার্থী আন্দোলনে অংশ নিচ্ছে।
এ প্রতিবেদেন লেখা পর্যন্ত আন্দোলনকারীরা বিশ্ববিদ্যালেয়ের প্রধান ফটকের সামনে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে প্রধান ফটকের সামনে পুলিশের শতাধিক সদস্য জল কামান, রায়টকার ও রাবার বুলেট নিয়ে অবস্থান সর্তক অবস্থানে থাকতে দেখা গিয়েছে।
এর আগে, শাবিপ্রবির বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে চলমান আন্দোলনে গতকাল রবিবার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।