ঢাকা : ময়মনসিংহ-৩ আসনের সরকারদলীয় সংসদ সদস্য নাজিম উদ্দিন আহমেদ আমলাতন্ত্রকে ইঙ্গিত করে সংসদে উপস্থিত অন্যান্য সাংসদদের উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনারা এমপি হয়ে আসছেন, আপনারা পার্লামেন্টে। আপনাদের কী রকম করে। শুধু স্যারটাই বলে। এই স্যারটা না বলে পারে না। আমরা আমলাতন্ত্রের হাতে জিম্মি হয়ে গেছি। পিয়ন পর্যন্ত আজকে আমাদের দাম দেয় না।

সোমবার (১৭ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে নাজিম উদ্দিন এ কথা বলেন। এর আগে বেলা ১১টায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়।

আমলাতন্ত্রের হাত থেকে বাঁচার জন্য সবাইকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়ে নাজিম উদ্দিন আহমেদ বলেন, সংসদ সদস্যদের বলবো, দয়া করে আমলাতন্ত্র থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য আপনারা শক্ত হন। শক্ত না হলে তারা আমাদের গুরুত্ব দেবে না।

ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের এই সাবেক সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা যদি সংসদে সত্য কথা বলি তাহলে বিষয়টি বিরোধীদলের ফ্লোরের মতো হয়ে যায়। আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় কিন্তু আমরা ভুগছি। আমলারা যেভাবে কথা বলেন! একটা এমপির মূল্য নেই আমলাদের কাছে। জাতীয় সংসদ সদস্য হিসেবে একজন সচিবের কাছে গেলে কোনো মূল্যায়ন নেই। তারা যে আমাদের শ্রদ্ধা করবেন- সেই শ্রদ্ধাবোধটুকুও নেই। পিয়ন পর্যন্ত আজকে আমাদের দাম দেয় না।

ময়মনসিংহ জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের এই সাবেক কমান্ডার বলেন, আমাকে কথা বলার জন্য ১৫ মিনিট সময় দেওয়ার কথা ছিল। সেখানে আশা করছিলাম ১০ মিনিট পাব। কিন্তু পেলাম ৭ মিনিট। আমার সকল আবেগ, অনুভূতি চলে গেছে। এলাকায় অনেক কাজ শুরু হলেও সেটা শেষ হচ্ছে না।

উপজেলা এবং ফায়ার সার্ভিসে যে কাজগুলো শুরু হয়েছে সেগুলো অর্ধেক হয়ে থেমে গেছে। সমস্ত কাজ একের পর এক বন্ধ হয়ে আছে। শিশু হাসপাতালেরও কাজ বন্ধ রয়েছে। ১০টি উচ্চবিদ্যালয়ের কাজ বন্ধ রয়েছে। ঠিকাদারদের জিজ্ঞেস করলে তারা বলে টাকা নেই।

এরপরই সংসদ সদস্য নাজিম উদ্দিন বলেন, বর্তমানে ইউটিউবে একটা জিনিস দেখি খালেদা জিয়া মরে যাচ্ছে। শেখ হাসিনা আর ক্ষমতায় নেই। সকালেই ক্ষমতাচ্যুত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সেনাপ্রধানকে ক্ষমতা থেকে টেনে নামানো হচ্ছে। ক্যাপশনে এসব লেখা দেখে গ্রামের মানুষ বিশ্বাস করে নিচ্ছে। তারা ধরে নিচ্ছে কী হচ্ছে দেশে। এভাবে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে- তথ্য মন্ত্রণালয় কী করে, আমি বুঝি না।

তিনি আরও বলেন, ইউটিউবের প্রচার-প্রচারণায় যে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে, তথ্য মন্ত্রণালয় কী সেটা জানে, না কি জানে না? তারা আসলে কি করছে? দরকার হলে ইউটিউব বন্ধ করে দেন। ক্রিমিনাল ও স্বাধীনতা বিরোধীদের সাথে আমাদের কোনও আপস থাকতে পারে না।