
ঢাকা: বস্ত্র খাতে ৭১ শতাংশ বা ৪২টি কোম্পানির, প্রকৌশল খাতে ৬৯ শতাংশ বা ২৯টি কোম্পানির এবং ওষুধ ও রসায়ন খাতের ৭৪ শতাংশ বা ২৩টি কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে।
সপ্তাহের তৃতীয় দিনের লেনদেনে শেয়ার কেনা বেচায় অনেকটা বিভ্রান্তিতে ছিল বিনিয়োগকারীরা। লেনদেনের শুরুতে সূচকের যে উত্থান আর লেনদেনের যে গতি ছিল সেটি শেষের দুই ঘণ্টায় ছন্দ হারিয়েছে।
মঙ্গলবার বেলা ১২ টাকা ৫২ মিনিট পর্যন্ত সূচক আগের দিনের চেয়ে ৪২ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছিল ৭ হাজার ৯৭ পয়েন্টে। তবে দিন শেষে বাড়তি সূচকের প্রায় পুরোটাই কমে আসে। আগের দিনের তুলনায় কেবল ০.৪৩ পয়েন্ট যোগ হয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে।
লেনদেনে ১৮৪ কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে। কমেছে ১৪৬টি কোম্পানির। দর পাল্টায়নি ৪৮টি কোম্পানির।
সূচক অবস্থান ধরে রাখতে পেরেছে বস্ত্র, প্রকৌশল, ওষুধ ও রসায়ন খাতের শেয়ারের দর বৃদ্ধির কারণে।
বস্ত্র খাতে এদিন ৭১ শতাংশ বা ৪২টি কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে। বিপরীতে কমেছে ৯টির। বাকি কোম্পানিগুলোর দর ছিল অপরিবর্তিত।
প্রকৌশল খাতে ৬৯ শতাংশ বা ২৯টি কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে। কমেছে ২৩ শতাংশ বা ১০টি কোম্পানির। বাকিগুলোর দর ছিল অপরিবর্তিত।
ওষুধ ও রসায়ন খাতে ৭৪ শতাংশ বা ২৩টি কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে।
অন্যান্য খাতের মধ্যে ব্যাংক খাতের ৫৩ শতাংশ কোম্পানির, আর্থিক খাতের ৪৫ শতাংশ আর মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতের ৩৯ শতাংশের দর বেড়েছে।
সূচকের উঠানামা থাকলেও বিনিয়োগকারীদের সক্রিয় হতে শুরু করার লক্ষণ স্পষ্ট লেনদেনে। দিন শেষে হাতবদল হয়েছে এক হাজার ৭১২ কোটি ৮৭ লাখ ৯৭ হাজার টাকার শেয়ার, যা আগের দিন ছিল ১ হাজার ৬৮৬ কোটি টাকা।
সদ্য সমাপ্ত বছরের শেষ মাসে লেনদেন তলানিতে নেমে আসার পর চলতি বছর এ নিয়ে টানা ১২ কর্মদিবস হাজার কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে পুঁজিবাজারে।
দর বৃদ্ধির ১০ কোম্পানি
মঙ্গলবার দিনের সর্বোচ্চ বা নয় শতাংশের বেশি শেয়ার দর বেড়েছে সাতটি কোম্পানির। এরমধ্যে একমাত্র দেশ গার্মেন্টসের শেয়ার দর বেড়েছে ১০ শতাংশ। কোম্পানিটির ১৭১ টাকার শেয়ার পৌঁছেছে ১৮৮ টাকা ১০ পয়সায়। ৪ কোটি ৬ লাখ টাকার ২ লাখ ২৩ হাজার ২১১টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে।
নতুন তালিকাভুক্ত ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্সের দর বেড়েছে ৯.৯১ শতাংশ। তবে কেবল ৩৮১টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে। সদ্য তালিকাভুক্ত হওয়া বিমা খাতের এই কোম্পানিটি গত বৃহস্পতিবার থেকে লেনদেন শুরু করেছে।
প্রাইম লাইফ ইন্স্যুরেন্সের দর ৯.৮৫ শতাংশ, শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজের দর ৯.৬৬ শতাংশ, এসএস স্টিলের ৯.৬২ শতাংশ, ফারইস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্সের দর ৯.৪৭ শতাংশ, শমরিতা হসপিটালের দর বেড়েছে ৯.৪১ শতাংশ।
এদিন সাত শতাংশের বেশি শেয়ার দর বেড়েছে ছয়টি কোম্পানির। এর মধ্যে অগ্নি সিস্টেমসের দর ৭.৮৬ শতাংশ, মতিন স্পিনিংয়ের শেয়ার দর ৭.৬৬ শতাংশ আর ফার্মা এইডের দর বেড়েছে ৭.৪৯ শতাংশ।
দর পতনের দশ কোম্পানি
সবচেয়ে বেশি দর হারিয়েছে অনালিমা ইয়ার্ড ৬.০৯ শতাংশ। দ্বিতীয় প্রান্তিকেও লোকসানের হিসাব প্রকাশের পর ৪১ টাকার শেয়ার নেমেছে ৩৮ টাকা ৫০ পয়সায়। ২ কোটি ২৭ লাখ টাকার ৫ লাখ ৮৯ হাজার ৮৯২টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে।
এছাড়া আইটি কনসালটেন্টনের শেয়ার দর ৪.৩৮ শতাংশ, আজিজ পাইপের দর ৪.৩১ শতাংশ, তুং হাই নিটিংয়ের দর ৪.২২ শতাংশ ও এশিয়া ইন্স্যুরেন্সের দর ৪.২২ শতাংশ কমেছে।
তিন শতাংশের বেশি শেয়ার দর কমেছে তিনটি কোম্পানির। এর মধ্যে প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলের দর ৩.৮২ শতাংশ, জনতা ইন্স্যুরেন্সের দর ৩.৪১ শতাংশ ও তিতাস গ্যাসের দর ৩.০৭ শতাংশ কমেছে।
দুই শতাংশের বেশি শেয়ার দর কমেছে ১৫টি কোম্পানির। আনোয়ার গ্যালভানাইজিংয়ের ২.৯৮ শতাংশ ও ডেসকোর ২.৯১ শতাংশ শেয়ার দর কমেছে।
লেনদেনে সেরা ১০
সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের ৯৮ কোটি ৮৪ লাখ টাকার। হাতবদল হয়েছে মোট ৭০ লাখ ২০ হাজার ৩৯১টি শেয়ার।
দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা বেক্সিমকো লিমিটেডের ৯৫ কোটি ৫০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। হাতবদল হয়েছে ৬৪ লাখ ৮৮ হাজার ২৪৮টি শেয়ার।
সাইফ পাওয়ারটেকে লেনদেন হয়েছে ৮৩ কোটি ৬০ লাখ টাকার। শেয়ার হাতবদল হয়েছে ১ কোটি ৭৬ লাখ ৩২ হাজার ৪৩৩টি।
জিপিএইচ ইস্পাতে ৭৩ কোটি ৭৬ লাখ টাকা, ফারইস্ট লাইফে ৪৯ কোটি ২৩ লাখ টাকা, পাওয়ারগ্রিডে ৪৭ কোটি ৮৮ লাখ টাকা, জিএসপি ফাইন্যান্সের ৪৩ কোটি ৩৭ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে।
এছাড়া ফরচুন সুজে ৪১ কোটি ৮১ লাখ টাকা, আর এ কে সিরামিকসে ৪০ কোটি ৬১ লাখ টাকা ও প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলে ৩৩ কোটি ৭৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।