অগ্ন্যুৎপাতের পর চরম খাদ্য সংকটে টোঙ্গা

Saturday, January 22nd, 2022

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মহাসাগরে ভয়াবহ অগ্ন্যুৎপাত ও সৃষ্ট সুনামিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে টোঙ্গা। প্রাকৃতিক এ দুর্যোগের এক সপ্তাহ পর দেশটিতে চরম খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। রয়েছে বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকটও। দেশটিতে খাদ্যের জন্য যে জরুরি পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে সেটি দীর্ঘমেয়াদি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জের রাষ্ট্র টোঙ্গার মাঠ-ঘাট ছাইয়ে ঢেকে গেছে। আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের কারণে এখনো দেশটির বিভিন্ন এলাকা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ব্যাহত হচ্ছে ত্রাণ সহায়তা কার্যক্রমও।

ডব্লিউএইচওর স্থানীয় লিয়াজোঁ অফিসের কর্মকর্তা ইউতারো সেতোয়া বলেন, আগ্নেয়গিরির ছাইয়ের কারণে বহু ফসল ধ্বংস হয়েছে দেশটির। ছোট দ্বীপটিতে জরুরি খাদ্য সহায়তা প্রয়োজন।

অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির রিসার্চ ফেলো এবং টোঙ্গার স্থানীয় বাসিন্দা জেমা মালুঙ্গাহু বলেন, জটিল বিষয় হচ্ছে যে, ফসলের ছাই ধুয়ে ফেলার জন্য জলের সংকট তৈরি হয়েছে। টোঙ্গাবাসীর নিজেদের উৎপাদিত খাবার গ্রহণ এখন নিরাপদ কিনা সেটি নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে, যেখানে তাদের খাদ্য শস্য ধোয়ার জন্য পরিষ্কার পানি নেই।

দেশটিতে বিশুদ্ধ পানিরও তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। বৃষ্টির পানি ধরে রাখার ট্যাংকগুলোও ছাইয়ে ভরে গেছে। টোঙ্গার রাজধানী নুকুয়ালোফায় অবস্থিত ডব্লিউএইচওর অফিস থেকে স্থানীয়দের দূষিত পানি পান না করার জন্য সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।

ডব্লিউএইচওর ওই কর্মকর্তা বলেছেন, এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, পানি বিশুদ্ধকরণের পর সেটি পান করা যায়, তবে স্যাটেলাইট ফোনের মাধ্যমে তিনি জানান যে, দুর্যোগকবলিত এলাকার অনেক মানুষ এখন বোতলজাত পানি পান করছেন।

টোঙ্গা বেশিরভাগ নিত্যপণ্যের জন্য আমদানির ওপর নির্ভরশীল। দেশটির সরবরাহ ব্যবস্থা যত বেশি সময় পর্যন্ত ব্যাহত হবে ততদিন এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে দেশটির সাধারণ মানুষের ওপর।

ডব্লিউএইচওর স্থানীয় কর্মকর্তা ইউতারো সেতোয়া ১৫ জানুয়ারি দুর্ঘটনাস্থল থেকে ৬৫ কিলোমিটার দূরে রাজধানীতে ছিলেন, যখন টোঙ্গা হাঙ্গা টোঙ্গা-হাঙ্গা হা’পাই আগ্নেয়গিরিতে অগ্ন্যুৎপাতের ঘটনাটি ঘটে। সেখান থেকেও ঘটনার আঁচ পান তিনি।

তিনি বলেন, দেশটির যোগাযোগ ব্যবস্থা পুরোপুরি সচল হতে আরও সপ্তাহ লেগে যেতে পারে। এখনো ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবস্থা সচল করা যায়নি। কেবল অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়েছে আন্তর্জাতিক ফোনকলের মাধ্যমে।

এদিকে টোঙ্গা সরকারের জরুরি সহায়তা আহ্বানের পর গত শুক্রবার নিউজিল্যান্ড ত্রাণ সহায়তা নিয়ে জাহাজ ও হেলিকপ্টার পাঠিয়েছে। গত বৃহস্পতিবার অস্ট্রেলিয়ান নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরাও ত্রাণ সহায়তা নিয়ে টোঙ্গার উদ্দেশ্য রওনা দেন। জাপানও সহায়তা পাঠিয়েছে দেশটিতে। এ ছাড়া চীন সরকার বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সহায়তার পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে।