
ঢাকা: গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী হারলেও ‘গণতন্ত্রের বিজয় হয়েছে’ বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থী হারলো কিনা, তার চেয়ে বড় কথা হলো গণতন্ত্র জয়লাভ করেছে। শেখ হাসিনা ওয়াদা (সুষ্ঠু নির্বাচনের) পূরণ করেছেন। প্রমাণিত হয়েছে বর্তমান সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করা সম্ভব।
শুক্রবার বিকালে ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের আওয়ামী কার্যালয়ের সামনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘গাজীপুরের নির্বাচনে গণতন্ত্রের বিজয় হয়েছে এবং দেশ বিদেশে প্রশংসিত হয়েছে। আওয়ামী লীগ জোর করে নিজের প্রার্থীকে জয়ী করতে যায়নি। গাজীপুর সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী বিজয়ী হলে দেশের মানুষ যতোটা খুশি হতেন, তার চেয়ে বেশি খুশি হয়েছেন ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার নির্বাচন হওয়ায়। এ জন্য নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানাই, জনগনকে ধন্যবাদ জানাই এবং বিজয়ী প্রার্থীকে অভিনন্দন জানাই।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, এই নির্বাচনে একটা বিষয় পরিষ্কার হয়েছে। বিএনপি এতদিন মিথ্যাচার করে আসছে— এই সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়; সেটি মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। শেখ হাসিনা ওয়াদা পূরণ করেছেন। গণতন্ত্র জয়লাভ করেছে।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, গাজীপুরের মতো আরও চার সিটি করপোরেশনসহ আগামী জাতীয় নির্বাচনও অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। এই লক্ষে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সরকার পতনের আন্দোলন কর্মসূচি ও আক্রমণাত্মক বক্তব্যের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, দেশের একটি মহল দিন রাত শেখ হাসিনার দুর্নাম করে বেড়ায়। তারা শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দেয়। শেখ হাসিনা বলেছেন সহ্য করতে।
সেতুমন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি – এটা স্লিপ অব টাং নয়। শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দিয়ে আওয়ামী লীগের লাখ লাখ ভোট বেড়ে গেছে। আর বিএনপির ভোট কমতে কমতে তলানিতে গিয়ে ঠেকবে। তাদের সঙ্গে দেশের মানুষ নেই। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করার কারণে মানুষ তাদেরকে প্রত্যাখান করেছে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, শেখ হাসিনার উন্নয়ন, আমাদের ভালো আচরণ – এই দুই নিয়ে আমাদের আগামী নির্বাচন করবো। দেশের মানুষ উন্নয়ন অগ্রগতি চায়। মানুষ যা চায় শেখ হাসিনা তা বুঝে মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করে যাচ্ছেন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বের উন্নয়নে বাংলাদেশের চেহারা পাল্টে গেছে।
মার্কিন ভিসানীতির কথা উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আগামী নির্বাচনে আমরা বাধা দেব কেন? আমাদের দেখা দরকার কারা নির্বাচনে বাধা দিচ্ছে। যারা নির্বাচন চায় না। তত্ত্বাবধায়ক চায় সরকার চায়,কিন্তু তত্ত্বাবধায়ক সরকার হবে না। কোনো বিদেশি বন্ধু একবারও কাউকে বলেনি তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে। যারা নির্বাচনে বাধা দেয় তাদের বিরুদ্ধে এ ভিসানীতি কার্যকর হয় কিনা সেটা দেখার বিষয়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি চেয়েছিল নিষেধাজ্ঞা, এসেছে ভিসা পলিসি। এ ভিসা পলিসি দেখে বিএনপির ঘুম হারাম। ফখরুলের মুখ শুকিয়ে গেছে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ূন কবিরসহ মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে পরাজিত করে নগরমাতা হয়েছেন সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলেমের মা স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুন। ৪৮০টি কেন্দ্রের ফলাফলে জায়েদা খাতুন (টেবিল ঘড়ি) পেয়েছেন দুই লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট। আর নৌকার প্রার্থী আজমত উল্লা খান পেয়েছেন ২ লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট।