
ঢাকা : বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, বেগম জিয়া যখন ১৬ টাকা দরে জনগণকে চাল দিয়েছে তখন এ সরকার বলেছিলো দশ টাকা দরে চাল খাওয়াবো৷ ঘরে চাকরি দিবে, কৃষকদের ফ্রি সার দিবে৷ কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে জনগণ আজ আশি টাকা দরে চাল কেনে৷ জনগণকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি রাখতে এ সরকার সীমাহীন ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে৷ ফলে এবারের আন্দোলন হবে চোর তাড়ানোর আন্দোলন৷ এবারের আন্দোলন হবে জঞ্জাল মুক্ত করার আন্দোলন৷ এবারের আন্দোলন হবে গণতন্ত্র হত্যাকারীদের তাড়ানোর আন্দোলন৷
শুক্রবার (৯ জুন) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী চালক দলের আয়োজনে সারাদেশে ভয়াবহ লোডশেডিং ও দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির প্রতিবাদে আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি৷
দুদু বলেন, ‘মানুষ এখন অতিষ্ঠ৷ মধ্যেবিত্তদের জন্য শ্বাসরুদ্ধকর একটি পরিস্থিতি৷ লুটপাট, সীমাহীন দুর্নীতি, কালোবাজারি এখন নিয়মিত ঘটনা৷ এমন কোনো জিনিস নাই যেটা সাধারণ মানুষের আয়ত্বে আছে৷ বিশ্বের চোখে আমরা এখন এক অভাবী দেশ৷’
পাওয়ার প্লান্ট নিয়ে আদানি গ্রুপের সাথে এ অসম চুক্তি করা হয়েছে উল্লখে করে বিএনপির এই ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, দেশের পাওয়ার প্লান্টের বড় অংশের চুক্তিই ভারতের সাথে৷ ভারতে প্রচুর পরিমানে প্রচুর কয়লা পাওয়া গেলেও আদানি গ্রুপের সাথে চুক্তিতে মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া থেকে কয়লা এনে বিদ্যুৎ উৎপাদন করার কথা বলা হয়৷ এমন অসম চুক্তি কিসের ইংঙ্গিত দেয় সেটা সবাই জানে৷ আজ পায়রা ও রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেছে৷ সরকারের মধ্যেও একটা ওলট-পালট অবস্থা শুরু হয়ে গেছে৷
প্রধানমন্ত্রী সব জানে কিন্তু এই ব্যর্থ সরকারকে যে পদত্যাগ করতে হবে সেটা তিনি জানেন না উল্লেখ করে ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, প্রতিনিয়ত বিদ্যুৎতের দাম বাড়ছে৷ ইচ্ছামতো তারা চার্জ কাটছে৷ কিছুই বলা যাচ্ছেনা৷ গ্রামের অনেক জায়গায় ষোলো থেকে আঠারো ঘন্টা বিদ্যুৎ থাকছেনা৷ তাহলে এ ব্যর্থ সরকারের থাকার দরকার কী? শুধু নির্বাচনের জন্য নয় তাদের ব্যর্থতার জন্যও এ সরকারের থাকার যৌক্তিকতা নেই৷ যেখানে আওয়ামীলীগ থাকে সেখানে গণতন্ত্র থাকতে পারেনা৷
সাবেক এই সংসদ বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে শহীদ জিয়া একজনই৷ তিনি লড়াই করেছেন দেশের জন্য৷ এ দেশের মানুষকে মুক্ত করেছিলেন৷ অথচ শহীদ জিয়াকে আওয়ামী লীগ সহ্য করতে পারেনা৷ আওয়ামী লীগের কিছু রাজাকারই এসব কাজে এগিয়ে থাকে৷
কৃষকদলের সাবেক এই আহ্বায়ক বলেন, পার্লামেন্ট ভেঙ্গে ২০২৩ সালেই এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে৷ এই সরকারের সাথে কোনো সংলাপ নেই৷ কারণ শেখ হাসিনাকে জনগণ আর বিশ্বাস করেনা৷ তারা ১৪ ও ১৮ সালে বিশ্বাস ভঙ্গ করেছে৷ বিএনপি আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ নয় বরং প্রতিদ্বন্দ্বী৷ আমরা সঠিক নির্বাচন ও সংগ্রামের মধ্যেই ক্ষমতায় আসবো৷
জাতীয়তাবাদী চালক দলের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন কবির এর সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য পিয়ারা মোস্তফা, ঢাকা মহানগর উত্তরের বিএনপির যুগ্ন আহ্বায়ক এজিএম সামছুল হক, দক্ষিনের যুগ্ন আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা ফরিদ উদ্দিন, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক মিয়া মো. আনোয়ার, দেশ বাচাও মানুষ বাচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন, চালক দলের সিনিয়র সহ সভাপতি মানিক তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক মো. জুয়েল খন্দকার, সাংগঠনিক সম্পাদক ইলাহি প্রিন্স প্রমুখ।